চর্যাপদ বাংলা ভাষার প্রাচীনতম পদ সংকলন তথা সাহিত্য নিদর্শন।
চর্যাপদের রচনা কাল :
বাংলা সাহিত্যের আদি গ্রন্থ ' চর্যাপদ' - এর রচনাকাল নিয়ে মতভেদ রয়েছে। ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর মতে, চর্যাপদের রচনা কাল সপ্তম থেকে দ্বাদশ শতাব্দীর মধ্যে (৬৫০ থেকে ১২০০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে)।
অপরদিকে, ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়য়ের মতে, চর্যাপদের রচনাকাল দশম থেকে দ্বাদশ শতক (৯৫০ থেকে ১২০০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে)।
সুকুমার সেনসহ বাংলা সাহিত্যের প্রায় সব পণ্ডিতই সুনীতিকুমারের মতামতকে সমর্থন করেছেন।
2. সাধনা পত্রিকার প্রথম সম্পাদক
সুধীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৩ জুলাই ১৮৬৯– ৭ নভেম্বর ১৯২৯) ছিলেন একজন ভারতীয় বাঙালী কবি, ঔপন্যাসিক ও গল্পকার। তিনি কলকাতার বিখ্যাত ঠাকুর পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
১৮৯১ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভ্রাতুষ্পুত্র সুধীন্দ্রনাথ ঠাকুর সম্পাদনায় পত্রিকাটি প্রথম প্রকাশ ঘটে। তিনিই ছিলেন এই পত্রিকার সম্পাদক। সুধীন্দ্রনাথ ঠাকুর কবিতা, উপন্যাস ও ছোটোগল্প রচনা করে গিয়েছেন।
সাধনা প্রথম প্রকাশিত হয় ১২৯৮ বঙ্গাব্দের অগ্রহায়ণ মাসে (ডিসেম্বর, ১৮৯১)।
চতুর্থ বছর সম্পাদনার ভার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নিজেই গ্রহণ করেন।
এই পত্রিকার প্রধান লেখক ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নিজেই।
3. গোবিন্দদাস রচিত সংস্কৃত নাটক
গোবিন্দদাস কবিরাজ (১৫৩৫ - ১৬১৩) হলেন বাংলা বৈষ্ণব পদাবলীর একজন বিখ্যাত পদকর্তা। তিনি চৈতন্য-উত্তর বৈষ্ণব পদাবলী সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ কবি।
গোবিন্দদাস রচিত সংস্কৃত নাটকের নাম ‘সংগীতমাধব’।
গোবিন্দদাসের আসল পদবি সেন।
বিদ্যাপতির ভাবশিষ্য ছিলেন গোবিন্দদাস।
গোবিন্দদাসের নামে প্রায় সাড়ে চারশত বৈষ্ণবপদ পাওয়া যায়।
মিথিলার কবি বিদ্যাপতি ছিলেন গোবিন্দদাসের কাব্যগুরু।
শ্রীজীব গোস্বামী গোবিন্দদাসকে ‘কবিরাজ’ উপাধি দেন।
জীব গোস্বামী গোবিন্দদাসকে ‘কবীন্দ্র’ উপাধিও প্রদান করেন।
ভাদেপা:
- তিনি খ্রিষ্টীয় অষ্টম শতকে ছিলো।
- তিনি শ্রাবন্তী এলাকায় অবস্থান ছিলো।
- ভাদেপা'র গুরু ছিলো জালন্ধরীপা, মতান্তরে কাহ্নপা।
- চর্যাপদের ৩৫ নং পদ রচনা করেন।
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর।
5. কোথা থেকে প্রথম চর্যাপদ প্রকাশিত হয়?
চর্যাপদ বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের আদি নিদর্শন। ১৯০৭ খ্রিস্টাব্দে মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী নেপাল রাজদরবারের গ্রন্থাগার থেকে এর পুথি আবিষ্কার করেন।
বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের সাহায্যে ১৯১৬ সালে প্রকাশিত হাজার বছরের পুরাণ বাঙ্গালা ভাষায় রচিত বৌদ্ধ গান ও দোঁহা নামক গ্রন্থের চব্বিশ (মতান্তরে তেইশ) জন বৌদ্ধ সিদ্ধাচার্যের রচিত চর্য্যাচর্য্যর্বিনিশ্চয়ের সাড়ে ছেচল্লিশটি গান।
হরপ্রসাদ শাস্ত্রী তার সম্পাদিত হাজার বছরের পুরাণ বাঙ্গালা বৌদ্ধ গান ও দোহা গ্রন্থের ভূমিকায় চর্যাচর্যবিনিশ্চয়, সরহপাদ ও কৃষ্ণাচার্যের দোহা এবং ডাকার্ণব-কে সম্পূর্ণ প্রাচীন বাংলার নিদর্শন বলে দাবি করেছেন।
চর্যাপদের ভাষা অবিমিশ্র বাংলা নয়, কারণ চর্যার কবিগণ ছিলেন বিভিন্ন অঞ্চলের (যথা বাংলা, উড়িষ্যা, আসাম, বিহার)। বাংলাদেশের ভৌগোলিক সীমা তখন নানাদিকে প্রসারিত ছিল।
চর্যাপদের কবিরা হলেন সরহপা, শবরপা, লুইপা, ডোম্বীপা, ভুসুকুপা, কাহ্নপা, কুক্কুরীপা, মীনপা, আর্যদেব, ঢেণ্ঢনপা প্রমুখ। চর্যাপদে তত্ত্বের কথা থাকলেও এর সাহিত্যমূল্যও স্বীকৃত। কবিরা যুক্তিবাদী ও মননধর্মী হয়েও উপমা-রূপকের ব্যবহারে দক্ষ ছিলেন। তাঁদের রচনাশৈলী শিল্পসৌকর্যের অভিমুখী।